ঢাকাশনিবার, ২৫শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ২:১৮
আজকের সর্বশেষ সবখবর

লিফট থেকে নামতেই পার্থকে পা ছুঁয়ে প্রণাম, জুতো ছোড়ায় নির্লিপ্ত কাতু শ্রদ্ধায় হতচকিত

ESAHARA NEWS অনলাইন নিউজ পোটাল
আগস্ট ৫, ২০২২ ৬:৪৯ অপরাহ্ণ
পঠিত: 112 বার
Link Copied!

নিজস্ব সংবাদদাতা, ইমরান খান :  এজলাসের পথে পার্থ। লিফট থেকে নামতেই প্রণাম করলেন এক ব্যক্তি। প্রাথমিক বিহ্বলতা কাটিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী কিন্তু উদাসীনই রইলেন। হাসপাতাল থেকে বার করার সময় দিন কয়েক আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায় (কাতু)-কে লক্ষ্য করে এক মহিলা জুতো ছুড়েছিলেন। ঠিক তার উল্টো দৃশ্য দেখা গেল শুক্রবার। আদালতে পার্থকে হাজির করানোর সময় তাঁর কাছে দৌড়ে গিয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে দেখা গেল এক জনকে। গোটা ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে হতচকিত হয়ে পড়েন পার্থ নিজেও। আদালত থেকে বার করার সময়েও ওই ব্যক্তিকে পার্থের কাছে পৌঁছতে দেখা যায়। যদিও নিরাপত্তারক্ষীরা সাদা জামা পরা ওই ব্যক্তিকে আটকে দেন।

মন্ত্রী ছিলেন যখন, তখন এমন দৃশ্য বার কয়েক দেখা গিয়েছে। যখন শাসকদলের মহাসচিব বা বিরোধী দলনেতার পদ সামলেছেন, তখনও নজরে এসেছে এমন ঘটনা। কিন্তু গত ২৩ জুলাইয়ের পর সবটা পাল্টে গিয়েছে। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ। তার কয়েক দিনের মধ্যে রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ করা হয় তাঁকে। সরিয়ে দেওয়া হয় দলের সব পদ থেকেও। তিনি এখন ইডির হেফাজতে। কয়েক দিন আগে জোকার ইএসআই হাসপাতাল থেকে বার করার সময় তাঁকে লক্ষ্য করে জুতোও ছোড়েন শুভ্রা ঘড়ুই নামে এক মহিলা। সেই পার্থকে এ ভাবে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করার দৃশ্য বর্তমান প্রেক্ষাপটে একেবারেই অন্য রকম। পার্থ নিজেও প্রাথমিক ভাবে হতচকিত হয়ে পড়েন। তার পর বিহ্বলতা কাটিয়ে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেন।

শুক্রবার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির বিশেষ আদালতে হাজির করানো হয় পার্থ এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতাকে। তিন তলার এজলাসে তখন চলছে শুনানি। লিফট থেকে পার্থকে নামাতেই সাদা শার্ট, ছাইরঙা ট্রাউজার্স পরা এক জন ছুটে এসে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলেন। তার পর তাঁকে ধরে এগিয়ে দেন এজলাসের দিকে। এজলাস থেকে বেরোনোর পর আবারও পাশে এসে দাঁড়ান সেই সাদা জামা, মেরুন ট্রাউজার্স পরা ব্যক্তি, পায়ে লাল জুতো, যিনি এজলাসে ঢোকার সময় পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছিলেন নেতাকে। লিফট পর্যন্ত পার্থের পাশেই হেঁটে গেলেন। ওঠার মুখে তাঁকে আটকে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা।   ওই ব্যক্তি পরে আনন্দবাজার অনলাইনকে জানান, তিনি পার্থের দীর্ঘ দিনের অনুগামী। নাম দেবকুমার রায়। বাড়ি হিন্দ মোটরে। হুগলির বাসিন্দা হলেও দলের কাজকর্ম করতেন কলকাতা থেকেই। সেই ১৯৯৬ সাল থেকে পার্থকে চেনেন। শুক্রবার আদালতের বাইরে দেবকুমার বললেন, ‘‘দলই সর্বোচ্চ। তবে ব্যক্তি পার্থদাকে চিনি সেই গোড়ার দিন থেকে। অনেক স্নেহ পেয়েছি। পার্থদার বিপদের দিনে না এসে পারলাম না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘জিজ্ঞেস করেছিলাম, কেমন আছেন? বললেন, ভাল নেই। আমি বলি, চিন্তা করবেন না। জগন্নাথ রক্ষা করবেন। আক্ষেপ করে দাদা শুধু বললেন, ‘জগন্নাথ প্রভু তো কিছুই করছে না রে।’ লিফট এসে গেল। আমি বললাম, আমি আছি দাদা।’’ এজলাসে মাত্র মিনিট দুয়েক ছিলেন পার্থ। সেখান থেকে বেরিয়ে পুলিশি প্রহরায় এগিয়ে যান। মাঝপথে হঠাৎই থমকে দাঁড়িয়ে পড়েন। এক বার চার পাশে চোখ বুলিয়ে নিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। মনে হল, কাউকে বোধ হয় খুঁজছেন। তার পর মাথা নামিয়ে আবার এগিয়ে চললেন লিফটের দিকে। পুলিশি ঘেরাটোপেই লিফটে উঠে যান পার্থ।

সুত্র— আনন্দবাজার পত্রিকা।

%d bloggers like this: