ঢাকাশনিবার, ২৫শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ১:৩৭
আজকের সর্বশেষ সবখবর

হলুদের সমারোহ নড়াইলে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌচাষিরা

ESAHARA NEWS অনলাইন নিউজ পোটাল
ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩ ৬:১৭ অপরাহ্ণ
পঠিত: 43 বার
Link Copied!

জেলা প্রতিনিধি নড়াইল: নড়াইলে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌচাষিরা মাঠ জুড়ে যেন হলুদের সমারোহ। দূর থেকে দেখে মনে হয় মাঠ যেন হলুদ চাদরে ঢাকা। মাঠের পর মাঠ সরিষার চাষ হচ্ছে নড়াইলে। বাতাসে দুলছে হলুদ ফুল। তাই মধু চাষিরাও ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সরিষার ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহে। ক্ষেতের পাশে পোষা মৌমাছির শত শত বাক্স থেকে মধু সংগ্রহ করছেন চাষিরা। জেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে। চাষিরা সাধারণত পছন্দের একটি সরিষা ক্ষেতের পাশে খোলা জায়গায় চাক ভরা বাক্স ফেলে রাখেন। একেকটি বাক্সে মোম দিয়ে তৈরি ৮ থেকে ১০টি মৌচাকের ফ্রেম রাখা হয়।

প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মৌচাষিরা এসব মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করেন। বাক্সের ভেতর রাখা হয় একটি রানি মৌমাছি। রানি মৌমাছির কারণে ওই বাক্সে মৌমাছিরা আসতে থাকে। মৌমাছিরা ফুল থেকে মধু এনে বাক্সের ভেতরের চাকে জমা করে। আর এই চাক থেকেই মধু সংগ্রহ করেন চাষিরা।

মৌ চাষের মাধ্যমে চাষিরা একদিকে যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে দূর হচ্ছে বেকারত্ব। সরিষা ফুলের মধু খাঁটি ও সুস্বাদু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানসহ বিদেশেও রফতানি হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মৌচাষিরা এসেছে নড়াইলে তিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।

নড়াইল সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামে আসা মৌচাষি মো. জাহাঙ্গীর মোল্যা বলেন, আমরা সরিষা ক্ষেত থেকে বছরে চার মাস মধু সংগ্রহ করি। অন্য আট মাস কৃত্রিম পদ্ধতিতে চিনি খাইয়ে মৌমাছিদের পুষে রাখা হয়। ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সরিষা থেকে মধু সংগ্রহের উপযুক্ত সময়। তখন সর্বত্রই সরিষার ফুল ফোটে।

তিনি আরও বলেন, আকার ভেদে একটি বাক্সে ৩০ থেকে ৪০ কেজি পর্যন্ত মধু পাওয়া যায়। এখানে মৌ চাষের বিশেষ বাক্স কলোনি রয়েছে ১০০টি। প্রতিটি কলোনিতে খরচ হয় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। আর প্রতি কেজি মধু বিক্রি করা হয় ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে। এ জেলায় আরও বেশ কয়েকটি চাষির দল রয়েছে।

লোহাগড়া উপজেলার চাচই গ্রামে আসা মৌচাষি রিপন শেখ বলেন, মৌমাছির রোগবালাই বলতে মাইট রোগ, মাথাঘোরা রোগ হয়। পরিবহনসহ প্রতি ফ্রেম মৌমাছি প্রতিপালনে বছরে গড়ে সাড়ে ৩০০ টাকা খরচ হয়। মৌচাষের প্রধান সমস্যা মধু বিক্রি। উদ্যোগের অভাবে দেশ-বিদেশে মধুর বাজার সম্প্রসারিত না হওয়ায় উৎপাদিত মধু বিক্রি করতে তাদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

উপরন্তু ভারতীয় ডাবর কোম্পানিসহ বিভিন্ন বিদেশি কোম্পানির মধু আমাদের দেশে আমদানি করা হয়। ফলে অভ্যন্তরীণ বাজারে কষ্টার্জিত মধু বিক্রি করতে হয় পানির দরে। তার দাবি সরকারিভাবে চাষিদের কাছ থেকে মধু সংগ্রহ করা হোক।
নড়াইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌমাছির চাষ হলে সরিষার ফলন বেড়ে যায়। সরিষা ক্ষেত থেকে বিনা খরচে মধু সংগ্রহ লাভজনক ব্যবসা হয়ে দেখা দিয়েছে। এতে কৃষক যেমন একদিকে মধু বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে ক্ষেতে মধু চাষ করায় সরিষার ফলনও বাড়ছে।

%d bloggers like this: